আজি এই আকুল আশ্বিনে মেঘে-ঢাকা দুরন্ত দুর্দিনে হেমন্ত-ধানের খেতে বাতাস উঠেছে মেতে কেমনে চলিবে পথ চিনে? দেখিছ না ওগো সাহসিকা ঝিকিমিকি বিদ্যুতের শিখা মনে ভেবে দেখো তবে এ ঝড়ে কি বাঁধা রবে কবরীর শেফালিমালিকা আজিকার এমন ঝঞ্ঝায় নূপুর বাঁধে কি কেহ পায়? যদি আজি বৃষ্টির জল ধুয়ে দেয় নীলাঞ্চল গ্রামপথে যাবে কি লজ্জায় হে উতলা শোনো কথা শোনো দুয়ার কি খোলা আছে কোনো? এ বাঁকা পথের শেষে মাঠ যেথা মেঘে মেশে বসে কেহ আছে কি এখনো? আজ যদি দীপ জ্বালে দ্বারে নিবে কি যাবে না বারে বারে? আজ যদি বাজে বাঁশি গান কি যাবে না ভাসি আশ্বিনের অসীম আঁধারে মেঘ যদি ডাকে গুরু গুরু নৃত্যমাঝে কেঁপে ওঠে ঊরু কাহারে করিবে রোষ, কার 'পরে দিবে দোষ বক্ষ যদি করে দুরু দুরু যাবে যদি, মনে ছিল না কি আমারে নিলে না কেন ডাকি? আমি তো পথেরি ধারে বসিয়া ঘরের দ্বারে আনমনে ছিলাম একাকী কখন প্রহর গেছে বাজি কোনো কাজ নাহি ছিল আজি ঘরে আসে নাই কেহ, সারাদিন শূন্য গেহ বিলাপ করেছে তরুরাজি যত বেগে গরজিত ঝড় যত মেঘে ছাইত অম্বর রাত্রে অন্ধকারে যত পথ অফুরান হত আমি নাহি করিতাম ডর বিদ্যুতের চমকানি-কালে এ বক্ষ নাচিত তালে তালে উত্তরী উড়িত মম উন্মুখ পাখার সম মিশে যেত আকাশে পাতালে তোমায় আমায় একত্তর সে যাত্রা হইত ভয়ংকর তোমার নূপুর আজি প্রলয়ে উঠিত বাজি বিজুলি হানিত আঁখি-'পর কেন আজি যাও একাকিনী? কেন পায়ে বেঁধেছ কিঙ্কিণী? এ দুর্দিনে কী কারণে পড়িল তোমার মনে বসন্তের বিস্মৃত কাহিনী?